বুঝে পড়ি লিখতে শিখি। দৃশ্যপটনির্ভর প্রশ্ন ও উত্তর। বাংলা। ৭ম শ্রেণি।
পরীক্ষার প্রস্তুতি
বুঝে পড়ি লিখতে শিখি
বাংলা
৭ম শ্রেণি
দৃশ্যপটনির্ভর প্রশ্ন ও উত্তর:
(১) নিচের অনুচ্ছেদটি পড়ো এবং নিম্নোক্ত প্রশ্নের উত্তর দাও:
মিলি একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ম্যানেজার হিসেবে কাজ করছেন। তার প্রতিষ্ঠানটি সম্প্রতি একটি নতুন স্বাস্থ্যসেবা প্রোগ্রাম চালু করেছে। মিলির কাজ হলো একটি বিস্তারিত প্রতিবেদন লেখা। যার মাধ্যমে নতুন প্রোগ্রামের কার্যকারিতা এবং তার ফলাফল বিশ্লেষণ করা যায়।
(ক) প্রতিবেদন লেখাটি যে ধরনের লেখার মধ্যে পড়ে তার বৈশিষ্ট্যগুলো লেখো।
(খ) তোমার স্কুলের নবীনবরণ অনুষ্ঠান সম্পর্কে একটি প্রতিবেদন লেখো।
ক) উত্তর:অনুচ্ছেদে উল্লিখিত ‘প্রতিবেদন’ লেখাটি এক ধরনের প্রায়োগিক লেখা। প্রায়োগিক লেখার বৈশিষ্ট্যগুলো হলো-
i. প্রায়োগিক লেখা প্রাত্যহিক জীবনের অংশ এবং এতে বাস্তব জীবনের প্রতিচ্ছবি বিদ্যমান।
ii. প্রায়োগিক লেখায় ব্যক্তিগত পছন্দ ও প্রয়োজনের বিষয়টি ফুটে ওঠে।
iii. এ লেখায় স্থান, কাল, পাত্রের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকে।
iv. প্রায়োগিক লেখায় বাস্তব তথ্য-উপাত্ত বিবৃত থাকে।
v. প্রায়োগিক লেখার ক্ষেত্রে বাস্তব অভিজ্ঞতার সাথে দক্ষতাও সমান গুরুত্বপূর্ণ।
vi. এ ধরনের লেখায় নিয়মকানুনের কড়াকড়ি কম থাকলেও ‘সামান্য কিছু শর্ত বা নিয়ম বা পদ্ধতি অনুসরণ করতে হয়।
খ) উত্তর: প্রতিবেদকের নাম : মেহের আফরোজ
প্রতিবেদনের ধরন ও প্রকৃতি : বিশেষ প্রতিবেদন বা সংবাদ, প্রতিবেদন
প্রতিবেদনের শিরোনাম : বিদ্যালয়ের নবীনবরণ অনুষ্ঠানের বর্ণনা
সরেজমিন তদন্তের স্থান : কলি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়
প্রতিবেদন তৈরির স্থান : কলি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়
প্রতিবেদন তৈরির সময় : বিকেল ৫টা
প্রতিবেদন তৈরির তারিখ : ৫ জানুয়ারি ২০২৪
প্রতিবেদনের জন্য ছবি সংযুক্তি:
কলি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের নবীনবরণ অনুষ্ঠান
মেহের আফরোজ ॥ চিলাহাটি ॥ ১২ জানুয়ারি ২০২৪ ॥ ১০ জানুয়ারি, সোমবার, কলি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে নবীনবরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এ উপলক্ষ্যে বিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মচারী এবং কিছু সংখ্যক অতিথি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানটি তত্ত্বাবধান করেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের নেতৃত্বে একদল শিক্ষক ও শিক্ষার্থী। এই আয়োজন উপলক্ষ্যে পুরো বিদ্যালয় রঙিন কাগজ, বেলুন ও ফুল দিয়ে সাজানো হয়।
পুরো আয়োজনটি দুটি পর্বে বিভক্ত ছিল। প্রথম পর্বে নবীনবরণ এবং দ্বিতীয় পর্বে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, যা সকলের জন্য উন্মুক্ত ছিল। নবীনবরণ পর্বটির আয়োজন করা হয় বিদ্যালয়ের অডিটোরিয়ামে। এই উপলক্ষ্যে বর্ণিল সাজে সাজিয়ে তোলা হয় অডিটোরিয়ামটি। মঞ্চে শিক্ষকদের আসন গ্রহণের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানটি শুরু হয়। অনুষ্ঠানটির সঞ্চালনের দায়িত্ব পালন করেন বাংলা বিভাগের শিক্ষিকা। তাঁর নির্দেশে বরণডালা নিয়ে সারিবদ্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে ফুলের পাপড়ি ছিটিয়ে নবীনদের বরণ করা হয়। এরপর প্রত্যেকের হাতে তুলে দেওয়া হয় একটি করে লাল গোলাপ। নবীনবরণ সংবর্ধনা শেষ হলে এ পর্যায়ে উপস্থিত শিক্ষক ও শিক্ষিকাবৃন্দ নবীন শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে মূল্যবান বক্তব্য প্রদান করেন। অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে প্রধান শিক্ষক তাঁর বক্তৃতায় নবীন শিক্ষার্থীরা যেন বিদ্যালয়ের নিয়মকানুন মেনে চলে, মন দিয়ে পড়ালেখা করে, নিয়মিত শ্রেণিকক্ষে উপস্থিত থাকে আর ভালো ফলাফল করে নিজেদের ও বিদ্যালয়ের নাম উজ্জ্বল করে এই আহ্বান জানান।
আয়োজনের দ্বিতীয় পর্বে শুরু হয় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রাণবন্ত অংশগ্রহণে অনুষ্ঠানটি হয়ে ওঠে অত্যন্ত উপভোগ্য।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক। অনুষ্ঠানের উপস্থাপনা করেন বিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থী। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘হৈমন্তী’ ছোটোগল্পের আলোকে একটি নাটিকাংশ উপস্থাপনের মধ্য দিয়ে বর্ণিল এই আয়োজনের পরিসমাপ্তি টানা হয়।
বুঝে পড়ি লিখতে শিখি
২) নিচের অনুচ্ছেদটি পড়ো এবং নিম্নোক্ত প্রশ্নের উত্তর দাও:
সম্রাট শাহজাহান তাঁর প্রিয় পত্নী মমতাজের স্মৃতিকে রক্ষা করতে নির্মাণ করেছিলেন তাজমহল। কালান্তরে, তাজমহল হয়ে উঠেছে পৃথিবীর অন্যতম একটি দর্শনীয় স্থাপত্য। প্রতিদিন বহু দেশের পর্যটকরা তাজমহল দেখতে আসে। তাই তো পৃথিবীর সপ্তাশ্চর্যের মধ্যে তাজমহলকে অন্যতম বলে বিবেচনা করা হয়।
(ক) তাজমহলের সৌন্দর্য ‘পিরামিড’ রচনার কোন স্থাপত্যের সঙ্গে তুলনীয়? ব্যাখ্যা করো।
(খ) ‘আলোচ্য রচনায় উক্ত স্থাপত্য ও অনুচ্ছেদের তাজমহল আত্মগুণেই পৃথিবীর সপ্তাশ্চর্য বস্তুর বিশেষণ পেয়েছে।’- মন্তব্যটি বিশ্লেষণ করো।
(ক) উত্তর: অনুচ্ছেদের তাজমহলের সৌন্দর্য ‘পিরামিড’ রচনার গুরুত্বপূর্ণ স্থাপত্য পিরামিডের সঙ্গে তুলনীয়।
‘পিরামিড’ রচনায় লেখকের মিশর ভ্রমণের অভিজ্ঞতা বর্ণিত হয়েছে। সেখানে লেখক মুগ্ধ দৃষ্টিতে দেখেছে পিরামিডের সৌন্দর্য। সেখানে গিয়ে তিনি জেনেছেন, পিরামিড তৈরি করতে তেইশ লক্ষ টুকরা পাথরের প্রয়োজন হয়েছিল। সবচেয়ে বড়ো পিরামিডটা বানাতে এক লক্ষ লোকের বিশ বছর সময় লেগেছিল।
অনুচ্ছেদে পৃথিবীর অন্যতম দর্শনীয় স্থাপত্য তাজমহলের সৌন্দর্যের কথা বলা হয়েছে। তাজমহল দেখতে প্রতিনিয়ত বহু পর্যটক যায়। তাজমহলের মনকাড়া সৌন্দর্য সকলকে মুগ্ধ করে। পূর্ণিমার রাতে অপরূপ দৃশ্য ধারণ করে তাজমহল। অন্যদিকে আলোচ্য রচনায় পিরামিডের অনন্য স্থাপত্যশৈলীর কথা তুলে ধরা হয়েছে, যা অনুচ্ছেদে বর্ণিত তাজমহলের সৌন্দর্যের মতোই মনোমুগ্ধকর।
(খ) উত্তর: দৃষ্টিনন্দন স্থাপত্যশৈলীর কারণে ‘পিরামিড’ রচনার মিশরের পিরামিড এবং অনুচ্ছেদের তাজমহল পৃথিবীর সপ্তাশ্চর্যের মর্যাদা পেয়েছে।
আলোচ্য রচনায় লেখকের অভিজ্ঞতায় মিশরের নানা দিক উঠে এসেছে। যার মধ্যে অনন্য স্থাপত্য পিরামিড অন্যতম। মিশরীয় সভ্যতার আকর্ষণ ও পৃথিবীর সপ্তাশ্চর্যের একটি মিশরের পিরামিড। পাথরের টুকরা দিয়ে তৈরি বিশালাকার সমাধিস্তম্ভ এটি।
অনুচ্ছেদে পৃথিবীর অন্যতম-নান্দনিক সৌন্দর্যের আধার তাজমহলের কথা বর্ণিত হয়েছে। তাজমহল তৈরি করতে লক্ষ শ্রমিকের প্রয়োজন হয়েছিল।
আলোচ্য রচনায় এবং উপরিউক্ত অনুচ্ছেদে তাজমহল ও পিরামিডের অনন্য স্থাপত্যশৈলীর কথা বর্ণিত হয়েছে। মিশরের পিরামিড মূলত ফারাওদের দেহকে মৃত্যুর পর মমি বানিয়ে রাখার জন্য নির্মিত। সবকিছু ছাড়িয়ে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে পিরামিডগুলো। অপরদিকে স্ত্রী মমতাজের প্রতি ভালোবাসার নিদর্শন হিসেবে সম্রাট শাহজাহান তাজমহল নির্মাণ করেছিলেন। বিচিত্র সৌন্দর্যের কারণে তাজমহল পৃথিবীর অনন্য স্থাপনার অন্যতম তাজমহল। তাই বলা যায়, অনুচ্ছেদের তাজমহল ও আলোচ্য রচনার পিরামিড আত্মগুণেই পৃথিবীর সপ্তাশ্চর্য বস্তুর বিশেষণ পেয়েছে।
বুঝে পড়ি লিখতে শিখি
৩) নিচের ছকটি লক্ষ করো এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।
ছাত্র-ছাত্রীদের ঝরে পড়ার হার |
২০১৫ | ২০১৬ | ২০১৭ | ২০১৮ |
প্রাথমিক | ২০.৪% | ১৯.২% | ১৮.৮% | ১৮.৬% |
মাধ্যমিক | ৪০.২৯% | ৩৮.৩০% | ৩৭.৮১% | ৩৭.৬২% |
উচ্চ মাধ্যমিক | ২০.৭% | ২০.৮% | ১৯.৮৯% | ১৯.৬৩% |
(ক) উপরের ছকে প্রদত্ত উপাত্ত বিশ্লেষণ করে বাক্য তৈরি করো।
(খ) উপরের ছকের উপাত্তের ভিত্তিতে তৈরি বিশ্লেষণমূলক বাক্যগুলো দিয়ে একটি অনুচ্ছেদ তৈরি করো।
(ক) উত্তর: i. ২০১৫ সালে প্রাথমিকে ঝরে পড়ার হার সবচেয়ে বেশি।
ii. ২০১৮ সালে প্রাথমিকে ১৮.৬% শিক্ষার্থী ঝরে পড়েছে।
iii. সবচেয়ে বেশি শিক্ষার্থী লেখাপড়া ছেড়ে দেয় মাধ্যমিকে।
iv. মাধ্যমিকে ঝরে পড়ার হার প্রাথমিক ও উচ্চমাধ্যমিকের সমষ্টির প্রায় সমান।
v. উচ্চমাধ্যমিকে ২০১৮ সালে ১৯.৬৩% শিক্ষার্থী ঝরে পড়ে।
vi. বর্তমানে শিক্ষায় ঝরে পড়া শিক্ষার্থীর হার ক্রমহ্রাসমান।
(খ) উত্তর: বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়ার হার (প্রাথমিক থেকে উচ্চমাধ্যমিক) বাংলাদেশে প্রতিবছর অনেক শিক্ষার্থী তাদের শিক্ষা কার্যক্রম থেকে ছিটকে পড়ে। ছাত্র-ছাত্রীদের ঝরে পড়ার হার সবচেয়ে বেশি মাধ্যমিক পর্যায়ে। ২০১৫, ২০১৬, ২০১৭ এবং ২০১৮ সালে মাধ্যমিকে ছাত্র-ছাত্রীদের ঝরে পড়ার হার ছিল যথাক্রমে ৪০.২৯%, ৩৮.৩০%, ৩৭.৮১% এবং ৩৭.৬২%। প্রাথমিকে শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়ার হার কম। ২০১৫, ২০১৬, ২০১৭ এবং ২০১৮ সালে প্রাথমিকে ঝরে পড়ার হার ছিল যথাক্রমে ২০.৪%, ১৯.২%, ১৮.৮% এবং ১৮.৬%। উচ্চমাধ্যমিক ও প্রাথমিকে পড়ার সময় ছেলে ও মেয়ে উভয়েই কিছু ক্রান্তিকালের মধ্য দিয়ে যায়, দারিদ্র্য ও সচেতনতার অভাবে অনেকে তখন লেখাপড়া ছেড়ে দেয়। ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে মেয়েদের সংখ্যাই বেশি। উচ্চমাধ্যমিকে ঝরে পড়ার হার সবচেয়ে বেশি ছিল ২০১৬ সালে। তবে আশার কথা হলো, ধীরে ধীরে তা হ্রাস পাচ্ছে।
৪) তুমি বিশ্লেষণমূলক লেখা সম্পর্কে ধারণা নিয়েছ। এবার তোমার পাওয়া ধারণা বর্ণনা করো।
উত্তর: শিক্ষার বিস্তার ও রুচির পরিবর্তনের কারণে মানুষ যুক্তিনিষ্ঠ রচনার প্রতি ক্রমেই আকৃষ্ট হচ্ছে। ফলে সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে অন্যান্য লেখার পাশাপাশি বিশ্লেষণধর্মী রচনাও পাঠকসমাজে বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে। বস্তুত, নানা বিষয়ে তথ্য ও বিবরণীর পর্যালোচনার ভিত্তিতে মতামত দিয়ে এ ধরনের রচনা লেখা হয়। তাই এ ধরনের লেখাকে বিশ্লেষণমূলক লেখা বলে। তবে এ ধরনের রচনা কেবল তথ্যবহুলই হয় না; বরং তাতে সৃজনশীলতার পাশাপাশি কোনো বিষয়ে যুক্তিনির্ভর ও বাস্তবসম্মত পর্যবেক্ষণও থাকে। ফলে এ ধরনের রচনা নির্দিষ্ট বিষয়ে পাঠককে একটি গ্রহণযোগ্য সিদ্ধান্তে আসতে সাহায্য করে। এ কারণে শিক্ষিত সমাজে দিন দিন বিশ্লেষণমূলক রচনার চাহিদা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশ্লেষণমূলক লেখা দুই প্রকার। যথা: ক. তথ্য বিশ্লেষণমূলক লেখা; খ. উপাত্ত বিশ্লেষণমূলক লেখা।
বুঝে পড়ি লিখতে শিখি
৫) নিচের অনুচ্ছেদটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও:
বাংলাদেশে নানা ধরনের খেলাধুলা প্রচলিত। এসবের মধ্যে ফুটবল সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলা। কাবাডি, কানামাছি ও গোল্লাছুট গ্রামবাংলার খুব জনপ্রিয় খেলা। এখন আবার জমে উঠেছে ক্রিকেট। বিশ্ব ক্রিকেটে বাংলাদেশের পরিচিতি আছে।
(ক) উদ্দীপকের আলোকে সেকাল ও একালের খেলাধুলার মিল ও অমিল দেখাও।
(খ) ‘মানবজীবনে খেলাধুলার প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম।’- ‘কত কাল ধরে’ প্রবন্ধের আলোকে মন্তব্যটি ব্যাখ্যা করো।
(ক) উত্তর: প্রাচীনকালে গ্রামে যেমন খেলার প্রচলন ছিল, সেগুলো একালে দেখা যায় না বললেই চলে।
‘কত কাল ধরে’ রচনায় লেখক প্রাচীনকালের সংস্কৃতির পরিচয় দিতে গিয়ে খেলাধুলার বর্ননা দিয়েছেন। সেকালে কুস্তি খেলার বেশ চল ছিল। মেয়েরা পুকুরে সাঁতার দিত ও বাগান করতে ভালোবাসত। মেয়েরা খেলত কড়ি খেলা, ছেলেরা দাবা আর পাশা। বড়োলোকরা ঘোড়া ও হাতির খেলা দেখত। ভেড়ার লড়াই, মোরগ লড়াইও প্রচলিত ছিল।
অনুচ্ছেদে একালের খেলার বর্ণনা আছে। এগুলোর মধ্যে ফুটবল সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলা। কাবাডি, কানামাছি, গোল্লাছুট গ্রামবাংলার প্রচলিত জনপ্রিয় খেলা। তবে বর্তমানে ক্রিকেট বেশ পরিচিতি লাভ করেছে। সেকালে এবং একালের খেলার মধ্যে মিল ও অমিল দুটোই লক্ষ করা যায়। সেকালে যেমন গ্রামবাংলায় মোরগ-মুরগির লড়াই প্রচলিত ছিল, একালের গ্রামবাংলায় তা খুব প্রচলিত না হলেও বিলুপ্ত হয়ে যায়নি একেবারে। তাছাড়া সেকালের মতো একালেও দাবা খেলা প্রচলিত আছে। তবে সময়ের আবর্তনে সেকালে এবং একালের খেলার মধ্যে যথেষ্ট পরিবর্তন লক্ষ করা যায়।
বুঝে পড়ি লিখতে শিখি
(খ) উত্তর: অনুচ্ছেদ এবং ‘কত কাল ধরে’ রচনায় খেলাধুলার প্রসঙ্গ এসেছে।
খেলাধুলা সুস্থ বিনোদনের অপরিহার্য উপাদান। কেননা, সুন্দরভাবে সুস্থভাবে বেঁচে থাকতে হলে মানুষের প্রয়োজন বিনোদন। বিনোদন ছাড়া জীবন নিরানন্দ, আর এই বিনোদনের অন্যতম প্রধান উৎস খেলাধুলা। খেলাধুলা শরীরকে সুস্থ রাখার পাশাপাশি মনোবল বাড়ায়। বর্তমানে খেলাধুলা মানুষের যোগ্যতা প্রমাণের অন্যতম প্রধান একটি ক্ষেত্র। যদি খেলাধুলা না থাকত তবে মানুষের জীবন আনন্দময় হতো না। সেই বিবেচনায় মানবজীবনে খেলাধুলার প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। খেলাধুলা মানুষের জীবনীশক্তিকে গতিশীল করে। নিয়মিত খেলাধুলা করলে একঘেয়েমি দূর হয়। নিয়মকানুন তথা শৃঙ্খলাবদ্ধ হওয়ার জ্ঞান বৃদ্ধি পায়। এছাড়া খেলাধুলার মাধ্যমে দেহের পেশিগুলো মজবুত হয়, শরীর শক্ত-সামর্থা হয় এবং মন প্রফুল্ল থাকে। ‘কত কাল ধরে’ রচনায় লেখক প্রাচীনকালের ইতিহাসের বর্ণনা দিতে গিয়ে খেলাধুলার প্রসঙ্গ এনেছেন। সেকালেও মানুষের বিনোদনের অন্যতম উৎস ছিল খেলাধুলা। অনুচ্ছেদেও একালের বিভিন্ন খেলার বর্ণনা দেওয়া হয়েছে।