আমাদের জীবনে প্রযুক্তি
কাঠামোবদ্ধ প্রশ্ন
১। আধুনিক প্রযুক্তি কাকে বলে? বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির মধ্যে চারটি পার্থক্য লেখ।
উত্তর : বর্তমানে যেসব প্রযুক্তির উদ্ভব হয়েছে এবং দৈনন্দিন নরে জীবনযাপনে ব্যবহৃত হচ্ছে তাদেরকে আধুনিক প্রযুক্তি বলে। নিম্নে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির মধ্যে পার্থক্য ব্যাখ্যা করা হলো-
(ক) বিজ্ঞান হলো প্রকৃতি সম্পর্কে জ্ঞান যা পর্যবেক্ষণ ও পরীক্ষা- নিরীক্ষার মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে প্রাকৃতিক ঘটনাকে ব্যাখ্যা এবং বর্ণনা করে। অপরদিকে, প্রযুক্তি হলো আমাদের জীবনের বাস্তব সমস্যা সমাধানের জন্য বিজ্ঞানের ব্যবহারিক প্রয়োগ।
(খ) বিজ্ঞান হলো বিশেষ জ্ঞানার্জনের প্রক্রিয়া। পক্ষান্তরে, প্রযুক্তি হলো বিজ্ঞান কর্তৃক অর্জিত জ্ঞানের প্রায়োগিক পদ্ধতি।
(গ) বিজ্ঞান হচ্ছে আবিষ্কারের তাত্ত্বিক রূপ অন্যদিকে প্রযুক্তি হচ্ছে বিজ্ঞান কর্তৃক আবিষ্কারের ব্যবহারিক রূপ।
(ঘ) বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি অনুসরণ করে বিজ্ঞানীরা বিজ্ঞানের প্রাকৃতিক ঘটনা সম্পর্কিত বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর অনুসন্ধান করে থাকে। অপরদিকে বৈজ্ঞানিক জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে প্রযুক্তিবিদরা নতুন নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবন করে।
(ঙ) বিজ্ঞানের ভিত্তি ছিল অনুসন্ধিৎসা। অন্যদিকে, প্রযুক্তির মূল লক্ষ্য ছিল পরিবেশকে নিয়ন্ত্রণ করা।
২) কৃষি প্রযুক্তি কী? কৃষি প্রযুক্তি কীভাবে আমাদের জীবনমান উন্নত করে? ৫টি বাক্যে লেখ।
উত্তর: বিজ্ঞানের যেসব আবিষ্কার কৃষিক্ষেত্রে ব্যবহার করে খাদ্যশস্যের তা উৎপাদন বহুগুণে বৃদ্ধি করেছে এবং কৃষকের কঠোর পরিশ্রম অনেকাংশে লাঘব করেছে তাই কৃষি প্রযুক্তি।
কৃষি প্রযু্ক্তি বিভিন্নভাবে আমাদের জীবনমান উন্নত করে। নিচে তা ব্যাখ্যা করা হলো-
(ক) বর্তমানে আধুনিক প্রযুক্তি যেমন- ট্রাক্টর, পাওয়ার টিলার, গভীর নলকূপ, ধান মাড়াই যন্ত্র, উন্নত জাতের ধানসহ আরো অনেক প্রযুক্তির উদ্ভাবন ঘটেছে।
(খ) জমি চাষ থেকে শুরু করে বীজ লাগানো, আগাছা দমন, সেট, ধান কাটা, ধান মাড়াই যন্ত্র, উন্নতে জাতের ধান প্রভৃতি কাজে আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা হচ্ছে, যা কৃষকদের পরিশ্রম অনেক কমিয়ে দিয়েছে।
(গ) প্রযুক্তির কল্যাণে উন্নত জাতের উচ্চ ফলনশীল (উফশী) ধান উদ্ভাবনের ফলে খাদ্য উৎপাদন অনেক গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।
(ঘ) উৎপাদন বাড়ানোর জন্য জমিতে ব্যবহৃত কীটনাশক, রাসায়নিক সার, আগাছানাশক সবই প্রযুক্তির অবদান।
(ঙ) জৈব প্রযুক্তি মানুষকে অধিক পুষ্টিসমৃদ্ধ, পোকামাকড় প্রতিরোধ এবং অধিক ফলনশীল উদ্ভিদ উৎপাদনে সহায়তা করছে।
৩) জৈব প্রযু্ক্তি ব্যবহার করে কৃষি উৎপাদনে যে রাসায়নিক পরিবর্তন হয়েছে তার দুটি উদাহরণ দাও। বাড়তি উৎপাদনের জন্য কৃষি রাসায়নিক প্রযুক্তি ব্যবহৃত হয়- ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: জৈব প্রযুক্তি ব্যবহার করে কৃষি উৎপাদনে যে পরিবর্তন হয়েছে তার দুটি উদাহরণ হলো-
(ক) এই প্রযুাক্তির মাধ্যমে বিশেষ বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন উদ্ভিদ সৃষ্টি করা হচ্ছে।
(খ অধিক পুষ্টিসমৃদ্ধ, পোকামাকড় প্রতিরোধ এবং অধিক ফলনশীল উদ্ভিদ উৎপাদনে সহায়তা করে।
বাড়তি উৎপাদনের জন্য কৃষি রাসায়নিক প্রযু্ক্তি ব্যবহৃত হয়। যেমন-
(ক) রাসায়নিক সার উদ্ভিদের ভালো বৃদ্ধি এবং অধিক ফসল উৎপাদনে সহায়তা করে।
(খ) রাসায়নিক পদার্থ ফসলের ক্ষতিকারক পোকা ও আগাছা দমন করে অধিক খাদ্য উৎপাদনে ভূমিকা রাখে।
(গ) রাসায়নিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে অধিক ফলনশীল ফসলের জাত উদ্ভাবন করে বাড়তি উৎপাদন পাওয়া সম্ভব হচ্ছে।
সুতরাং বলা যায় যে, বাড়তি উৎপাদনের জন্য রাসায়নিক প্রযু্ক্তি ব্যবহৃত হয়।
৪) প্রযু্ক্তির ক্ষতিকর প্রভাবের দুটি উদাহরণ লেখ। প্রযুক্তি ব্যবহারের চারটি সুবিধা লিখ।
উত্তর: প্রযু্ক্তির ক্ষতিকর প্রভাবের দুটি উদাহরণ হলো-
(ক) বৈশ্বিক উষ্ণায়ন এবং
(খ) এসিড বৃষ্টি।
প্রযুক্তি ব্যবহারের চারটি সুবিধা হলো-
(ক) প্রযুক্তির ব্যবহার মানুষের জীবনের মনোন্নয়ন করেছে।
(খ) ফ্রিজ, টেলিভিশন, মোবাইল ফোন, বৈদ্যুতিক বাতি মানুষের জীবনযাত্রা উন্নত করেছে।
(গ) কৃষিক্ষেত্রে প্রযুক্তি যেমন- ট্রাক্টর, সেচ পাম্প, মাড়াই যন্ত্রের মাধ্যমে চাষাবাদ সহজ হয়েছে।
(ঘ) রাসায়নিক প্রযুক্তি যেমন- রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ব্যবহারের ফলে কৃষি ফলন বৃদ্ধি পেয়েছে।