সাহিত্য পড়ি লিখতে শিখি
বাংলা
৭ম শ্রেণি
দৃশ্যপটনির্ভর প্রশ্ন ও উত্তর:
১) নিচের কবিতাংশটি পড়ে নিম্নোক্ত প্রশ্নের উত্তর দাও।
পরিচয়ে আমি বাঙালি, আমার আছে ইতিহাস গর্বের-
কখনোই ভয় করি নাকো আমি উদ্যত কোনো খড়গের।
শত্রুর সাথে লড়াই করেছি, স্বপ্নের সাথে বাস;
অস্ত্রেও শান দিয়েছি যেমন শস্য করেছি চাষ;
একই হাসিমুখে বাজায়েছি বাঁশি, গলায় পরেছি ফাঁস;
আপস করিনি কখনোই আমি- এই হলো ইতিহাস।
[আমার পরিচয়, সৈয়দ শামসুল হক]
(ক) কবিতাংশে ‘নোলক’ কবিতার যে দিকের সাদৃশ্য রয়েছে তা ব্যাখ্যা করো।
(খ) কবিতাংশের মূলভাব ও ‘নোলক’ কবিতার মূলভাব সার্থক কি? তোমার যৌক্তিক মত দাও।
ক) উত্তর: কবিতাংশে নোলক কবিতার আপসহীনতার দিকটির সাদৃশ্য রয়েছে। ‘নোলক’ কবিতার কবি তাঁর মায়ের হারিয়ে যাওয়া নোলক খুঁজছেন। এখানে ‘মা’ হচ্ছেন দেশমাতৃকা এবং ‘নোলক’ কবির মা অর্থাৎ এই দেশের হারানো ঐতিহ্য। কবি দেশব্যাপী এই ঐতিহ্য খুঁজে বেড়াচ্ছেন। কবি নদীর কাছে গিয়েছেন, বনের কাছে গিয়েছেন কিন্তু সবাই কবিকে ফিরিয়ে দিয়েছে। তবুও কবি বিভিন্ন জায়গায় হারানো ঐতিহ্য খুঁজে ফেরেন। কবির প্রতিজ্ঞা হচ্ছে হারানো ঐতিহ্য ফেরত না নিয়ে তিনি যাবেন না। অর্থাৎ কবির আপসহীনতার প্রমাণ পাওয়া যায়। কবিতাংশেও কবি বাঙালির আপসহীনতার পরিচয় তুলে ধরেছেন। বাংলার ইতিহাসে কবি কখনোই কোনো অস্ত্রকে ভয় পাননি। মাতৃভূমিকে ভালোবেসে শস্য চাষ এবং একই হাতে অস্ত্রেও শান দিয়েছেন। ইতিহাস রক্ষার প্রয়োজনে গলায় ফাঁসিও নিতে আপস কবি করেনি কখনো। তাই বলা যায়, কবিতাংশে ‘নোলক’ কবিতার আপসহীনতার দিকটির সাদৃশ্য পাওয়া যায়।
খ ) উত্তর: কবিতাংশের মূলভাব ও ‘নোলক’ কবিতার মূলভাব পরস্পরের সমার্থক। নিচে এর পক্ষে আমার মত তুলে ধরা হলো-
কবিতাংশের মূলভাব যে মাতৃভূমির প্রতি অনুরাগ ও ভালোবাসা প্রকাশ করে তা সহজেই বোঝা যায়। অন্যদিকে ‘নোলক’ কবিতায় কবি এক কিশোরের ভূমিকায় বলেছেন তাঁর মায়ের সোনার নোলক হারিয়ে গেছে। কিশোরটি সেই নোলক সারা বাংলাদেশে খুঁজে বেড়ায়। নদীর কাছে, বনের কাছে গেলে সেখানকার সবাই কবিকে অপরাগতা জানায়। মায়ের নোলক অর্থাৎ দেশের হারানো ঐতিহ্য কিশোররূপী কবি কোথাও পায় না। কিন্তু তারপরেও কবির তীব্র প্রতিজ্ঞা আমরা শুনতে পাই যে তিনি দেশের হারানো ঐতিহ্য না নিয়ে ঘরে ফিরবেন না। এখানেও মূলভাব হিসেবে কবির মা ও মাতৃভূমির প্রতি ভালোবাসা ও-অনুরাগ প্রকাশিত হয়েছে। কবিতাংশে কবি নিজের পরিচয় বলতে বাঙালির পরিচয় তুলে ধরেছেন। কবিতাংশে দেশের প্রতি কবির ভালোবাসা প্রত্যক্ষ করা যায়। বাঙালি শত্রুর সাথে লড়তে কখনো ভয় করে না বরং অস্ত্র হাতে তুলে নেয়। আবহমানকাল ধরে চলে আসা বাংলার ঐতিহ্য কৃষিকাজ করেই বাঙালি জীবন কাটিয়েছে। সুতরাং আমরা বলতে পারি যে, কবিতাংশের মূলভাব ও কবিতার মূলভাব পরস্পরের সমার্থক।
সাহিত্য পড়ি লিখতে শিখি
২) নিচের অনুচ্ছেদটি পড়ে নিম্নোক্ত প্রশ্নের উত্তর দাও।
শিমুলতলী গ্রামের পাশে দিয়ে বয়ে চলেছে ছোট্ট একটি নদী। গ্রীষ্মকালে নদীতে জাগে চর। তখন কৃষকেরা নদীর চরে বিভিন্ন রকম শস্য চাষ করে। আবার নদী যখন ভরা থাকে তখন প্রচুর মাছ পাওয়া যায়। জেলেরা মাছ ধরে। নদীর অনতিদূরে দেখা যায় গরু, মহিষ ঘাস খায়। প্রকৃতি ও প্রাণের একাত্মতায় গ্রামটি অসাধারণ রূপে সজ্জিত হয়েছে।
(ক) অনুচ্ছেদটির সাথে ‘ময়নামতীর চর’ কবিতার যে সাদৃশ্য রয়েছে তা ব্যাখ্যা করো।
(খ) অনুচ্ছেদটি এবং ‘ময়নামতীর চর’ কবিতাটির সাথে তোমার জীবনের বা চারপাশের যে মিল রয়েছে তা ব্যাখ্যা করো।
ক) উত্তর: অনুচ্ছেদটিতে ফুটে ওঠা নদীর তীরবর্তী চরের প্রাকৃতি সৌন্দর্য বর্ণনার দিক থেকে ‘ময়নামতীর চর’ কবিতার সাদৃশ্য রয়েছে।
‘ময়নামতীর চর’ কবিতায় একটি নদীর চরের বর্ণনা দেওয়া হয়েছে। কবিতায় দেখা যায় চরে চাষিরা লাঙল দিয়ে জমি চাষ করে। শীতের রাতে চাষিরা আখখেত পাহারার জন্য বাঁশ পুঁতে মাচা করে। চরের কূল ঘেঁষে সাঁতার কাটা খরশুলা, গাঙচিলের মাছ ধরে গাছে বসে খাওয়া, গোরুর পালের ঘাস খাওয়া এবং গোচর পাখি ও শালিকের আনাগোনা চরের সৌন্দর্যকে আরো বেশি মনোমুগ্ধকর করে তোলে।
অনুচ্ছেদেও দেখা যায় শিমুলতলী গ্রামের পাশ দিয়ে যে ছেট্টো নদীটি বয়ে গেছে তার চরে কৃষকরা বিভিন্নরকম চাষাবাদ করে। নদীতে মাঝিরা মাছ ধরার দৃশ্য ও গরু- মহিষের ঘাস খাওয়ার দৃশ্য অপরূপভাবে ফুটে ওঠেছে অনুচ্ছেদটিতে। সুতরাং বলা যায় ‘ময়নামতীর চর’ কবিতা ও অনুচ্ছেদে চরের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বর্ণনার দিক থেকে সাদৃশ্যপূর্ণ।
খ) উত্তর: অনুচ্ছেদ এবং ‘ময়নামতীর চর’ কবিতাটিতে বর্ণিত প্রাকৃতিক পরিবেশ ও কর্মপ্রণালির সঙ্গে আমাদের গ্রামীণ জীবনের সাদৃশ্য খুঁজে পাই।
অনুচ্ছেদ বা ‘ময়নামতীর চর’ কবিতায় বর্ণিত দৃশ্যের মতো আমাদের গ্রামের পাশ দিয়ে একটি নদী বয়ে গেছে। আগে এটি একটি খরস্রোতা নদী থাকলেও বর্তমানে এই নদী তার নাব্যতা- হারিয়েছে। নদীর কিছু কিছু অংশে চর জেগে উঠেছে। বর্ষকাল ছাড়া এই নদীতে পানি তেমন থাকে না। নদীর কিনারে কৃষকেরা ধান চাষ করেন। জেগে ওঠা চরে অন্যান্য ফসল চাষ করা হয়। ফসল চাষের পাশাপাশি তা একটি গো-চারণ ভূমি হিসেবে ব্যবহৃত হয়। নদীর চরে তরমুজ, বাঙ্গি, শীতকালীন সবজি ও গ্রীষ্মকালীন অন্যান্য সবজি চাষ করা হয়। আমাদের এলাকার প্রাকৃতিক পরিবেশ অত্যন্ত মনোরম। অনুচ্ছেদে এবং ‘ময়নামতীর চর’ কবিতায় বর্ণিত প্রাকৃতিক পরিবেশের সঙ্গে আমাদের এলাকার শান্ত নদীর মিল খুঁজে পাই আমি।
সাহিত্য পড়ি লিখতে শিখি
৩) শাহিনের বয়স সাত বছর। তাদের বাড়ি সুন্দরবনের পাশেই। শাহিনের সুন্দরবনে গিয়ে হরিণ দেখার খুব ইচ্ছে। কিন্তু তার বাবা-মা ও বড়ো ভাই মাহিন তাকে বনের মধ্যে যেতে দিতে চায় না। তাই একদিন সে লুকিয়ে লুকিয়ে বড়ো ভাইয়ের পিছু নেয়। মাহিন যখন শাহিনকে দেখতে পায় ততক্ষণে তাঁরা বনের কাছে পৌঁছে গিয়েছে। মাহিন প্রথমে শাহিনের ওপর রাগ দেখালেও শেষ পর্যন্ত তাকে হরিণ দেখার সুযোগ দেয়। এতে শাহিন খুশিতে নাচতে থাকে।
(ক) দৃশ্যপটের শাহিনের সাথে তোমার পঠিত ‘আষাঢ়ের এক রাতে’ গল্পের কোন চরিত্র সাদৃশ্যপূর্ণ? ব্যাখ্যা করো।
(খ) ‘দৃশ্যপটটি ‘আষাঢ়ের এক রাতে’ গল্পের আংশিক রূপমাত্র। সম্পূর্ণরূপ নয়’- তোমার মতামত দাও।
(ক) উত্তর: দৃশ্যপটের শাহিন ‘আষাঢ়ের এক রাতে’ গল্পের আবু চরিত্রের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ।
শিশুমন সাধারণত কৌতূহল প্রিয় হয়ে থাকে। তারা নিজেদের কৌতূহলের বিষয়টি জানতে ও দেখতে আনন্দবোধ করে। ‘আষাঢ়ের এক রাতে’ গল্পের আবু চরিত্রটির মধ্যে কৌতূহলী শিশুমনের প্রকাশ পরিলক্ষিত হয়। মাছ ধরার খুব ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও বয়সে ছোটো হওয়ায় সে একা মাছ ধরতে যেতে পারে না। তাই একদিন বড়ো ভাই ও তার বন্ধুদের মাছ ধরার পরিকল্পনার বিষয়টি জানতে পেরে সে লুকিয়ে তাদের সঙ্গে মাছ ধরতে গিয়েছিল। সেখানে সে তার বড়ো ভাইয়ের কাছে ধরা পড়ে যায়। পরবর্তীতে মাছ ধরার অনুমতি পেয়ে সে খুব খুশি হয়ে যায়। দৃশ্যপটেও শাহিনের হরিণ দেখার শখ থাকায় সে তার ভাইয়ের পিছু নেয়। বনের কাছে পৌঁছালে সে তার ভাইয়ের কাছে ধরা পড়ে। এ ঘটনায় প্রথমে তার ভাই রাগ করলেও পরবর্তীতে তাকে হরিণ দেখার সুযোগ দিলে সে আনন্দিত হয়। শখ পূরণ করতে পেরে দৃশ্যপটের শাহিন ও গল্পের আবু উভয় চরিত্রই আনন্দবোধ করে। তাই বলা যায় দৃশ্যপটের শাহিন ‘আষাঢ়ের এক রাতে’ গল্পের আবু চরিত্রের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ।
(খ) উত্তর: দৃশ্যপটে ‘আষাঢ়ের এক রাতে’ গল্পের শুধু ইচ্ছাপূরণের বিষয়টিই ফুটে উঠেছে সম্পূর্ণরূপ নয়।
‘আষাঢ়ের এক রাতে’ গল্পটিতে আবুর লুকিয়ে মাছ ধরতে যাওয়ার বিষয়টির পিছনে একটি গভীর সত্যকে উপস্থাপন করা হয়েছে। বয়সে বড়ো হলেই মানুষ কাজে সফল হবে এ ভুল ধারনার কারণে মানুষ বয়সে ছোটোদের অবহেলা-অবজ্ঞা করে থাকে। যদিও অনেক ক্ষেত্রেই তারা ভুল প্রমাণ হয়ে থাকে। গল্পের আবুর বড়ো মাছ ধরা ও বড়ো ভাইদের পুঁটি মাছ ধরার মাধ্যমে সেই সত্যই ফুটে উঠেছে। অন্যদিকে দৃশ্যপটে কেবল শাহিনের সুন্দরবনে হরিণ দেখার প্রবল ইচ্ছার কথা বর্ণিত হয়েছে। তাই সে লুকিয়ে বড়ো ভাইয়ের পিছু নিয়ে তার ইচ্ছা পূরণ করেছিল। এ ঘটনার সাথে ছোটোদের কাজের যথার্থ মূল্যায়নের কোনো দিক ফুটে উঠেনি। তাই বলা যায় দৃশ্যপটটি ‘আষাঢ়ের এক রাতে’ গল্পের আংশিক রূপমাত্র সম্পূর্ণরূপ নয়।
সাহিত্য পড়ি লিখতে শিখি
৪) নদীমাতৃক বাংলাদেশে প্রায় সব নদী-নালা বর্ষাকালে পানিতে টইটুম্বুর থাকে। জীবিকা নির্বাহের তাগিদ ছাড়াও এসময় বহু মানুষ শখের কারণে নদীতে মাছ ধরতে যায়। কোনো কোনো এলাকায় মাছ ধরা নিয়ে প্রতিযোগিতাও হয়ে থাকে। যারা মাছ ধরতে ভালোবাসে তাদের কাছে এ প্রতিযোগিতা খুবই উপভোগ্য।
(ক) উক্ত দৃশ্যপটের সঙ্গে তোমার পঠিত ‘আষাঢ়ের এক রাতে’ গল্পের কোন দিকটি সাদৃশ্যপূর্ণ?
(খ) দৃশ্যপট ও ‘আষাঢ়ের এক রাতে’ গল্পের সঙ্গে তোমার জীবনে ঘটে যাওয়া কোনো ঘটনার মিল পাওয়া যায় কি, না ব্যাখ্যা করো?
(ক) উত্তর: বর্ষাকালে মাছ ধরার আনন্দঘন অনুভূতির বিষয়টির সঙ্গে দৃশ্যপট ও ‘আষাঢ়ের এক রাতে’ গল্পের সাদৃশ্য বিদ্যমান। আলোচ্যগল্পে মৌরি বিলের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। মৌরি বিলে আষাঢ় তথা বর্ষাকালে প্রচুর মাছ ধরা পড়ে। ছোটো-বড়ো প্রায় সব ধরনের মাছ এ বিলে আসে। বোয়াল, পাঙ্গাস, ট্যাংরা, পুঁটি, পারশে প্রায় সব ধরনের মাছ পাওয়া যায়। এ বিলেই মাছ ধরে আবুর বড়ো ভাই সাজেদ ও তার বন্ধুরা। বিদ্যুতের ঝলকানি, মেঘের গর্জন বৃষ্টিমুখর পরিস্থিতিতেও তারা অত্যন্ত আমেজের সাথেই মাছ ধরতে যায়। দৃশ্যপটে বর্ষাকালে আমাদের দেশের প্রায় সব নদী যে পানিতে টইটুম্বুর থাকে সে বিষয়টি ফুটে উঠেছে। এ সময় লোকেরা নদীতে জীবিকা নির্বাহ করা ছাড়াও শখের তাড়নায় মাছ ধরতে যায়। এসময় বিভিন্ন নদীতে পানি টইটুম্বুর থাকায় সেখানে মাছ পাওয়া যায়। তাই বিভিন্ন অঞ্চলে এ সময় মাছ ধরার উৎসব হয়ে থাকে। মাছ ধরতে ভালোবাসে এমন মানুষরা এ মৌসুমটি অত্যন্ত উপভোগ করে। তাই বলা যায়, দৃশ্যপট ও আষাঢ়ের এক রাতে গল্পে উভয়ই স্থানে বর্ষাকালে মাছ ধরার আনন্দঘন অনুভূতিটি ফুটে উঠেছে।
(খ) উত্তর: দৃশ্যপট ও ‘আষাঢ়ের এক রাতে’ গল্পের সঙ্গে আমার জীবনে ঘটে যাওয়া একটি ঘটনার মিল রয়েছে। আমাদের বাড়ির পিছনেও একটি বিল রয়েছে। বর্ষার শেষে পানি কমে গেলে সেখানে নানা ধরনের মাছ পাওয়া যায়। বিভিন্ন ধরনের জাল দিয়ে মাছ ধরতে হয়। পানি বেশি থাকলে রাতের বেলায় সেখানে বড়শিতে টোপ দিয়ে বেঁধে রাখতে হয়। সকালে গিয়ে মাছ নিয়ে আসা যায়। আমি ও আমার বড়ো মামা সেখানে প্রায়ই মাছ ধরতে যাই। কখনো রাতে হারিকেনের আলোতে আমরা মাছ ধরি সেই বিল থেকে। দৃশ্যপট ও ‘আষাঢ়ের এক রাতে’ গল্পের মতোই আমার জীবনের ঘটনাটিও মূলত মাছ ধরার শখের মধ্যেই আবর্তিত।
সাহিত্য পড়ি লিখতে শিখি
৫) সফলতা বয়সের ওপর নির্ভর করে না। পৃথিবীতে যাঁরা তাঁদের কর্ম দিয়ে সফল হয়েছেন তাদের মধ্যে অনেকেই আছেন যাঁরা বয়সে অনেক ছোটো। যাঁরা মনে করেন সফল হতে গেলে অবশ্যই বড়ো হতে হবে, তাঁরা ভুলের স্বর্গে বাস করছেন। কারণ সফলতার কোনো বয়স নেই। সফলতা লাভের জন্য কেবল প্রয়োজন প্রবল ইচ্ছা ও প্রচেষ্টা।
(ক) ‘সফলতা লাভের জন্য কেবল প্রয়োজন প্রবল ইচ্ছা ও প্রচেষ্টা’- তোমার পঠিত ‘আষাঢ়ের এক রাতে’ গল্পের ভিত্তিতে’ আলোচনা করো?
(খ) ‘দৃশ্যপটে ফুটে ওঠা দিকটি আলোচ্য গল্পের একমাত্র দিক নয় প্রমাণ করো?
(ক) উত্তর: সফলতা লাভের পিছনে একজন মানুষের প্রবল ইচ্ছা ও প্রচেষ্টাই হলো মূল ভিত্তি।
‘আষাঢ়ের এক রাতে’ গল্পে দশ বছর বয়সি আবুকে তার ভাই মাছ ধরতে সাথে নিতে চায় না। কারণ সে মনে করে আবুর অভিজ্ঞতা নেই। সে বয়সে ছোটো তাই মাছ ধরতে পারবে না। পরবর্তীতে আবুর বোয়াল মাছ ধরা ও তার বড়ো ভাইয়ের শুধু পুঁটি মাছ ধরার চিত্রে আপতদৃষ্টিতে আমাদের সামনে একটি বিষয় ফুটে ওঠে যে সফলতা কোনো বয়সের অভিজ্ঞতার ওপর নির্ভর করে না। শুধু বয়সে অনেক ছোটো হয়েও নিজের প্রবল ইচ্ছা ও প্রচেষ্টার মাধ্যমে সফল হওয়া যায়।
(খ) উত্তর: দৃশ্যপটে ‘আষাঢ়ের এক রাতে’ গল্পের বিষয়বস্তুর সফলতা লাভের কোনো নির্দিষ্ট বয়স নেই এই তাৎপর্যপূর্ণ অংশটি প্রকাশিত হলেও গল্পের সম্পূর্ণদিকটি প্রকাশিত হয়নি।
‘আষাঢ়ের এক রাতে’ গল্পটিতে বর্ষাকালে মৌরি বিলের সৌন্দর্যের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। মৌরি বিলে বর্ষার পানিতে নানা জাতের মাছ আসে। সেখানে আবু তার বড়ো ভাই সাজেদের সঙ্গে লুকিয়ে মাছ ধরতে যাওয়ার ঘটনার মধ্যে রোমাঞ্চকর এক চিত্র উঠে এসেছে। মূলত আবুর লুকিয়ে মাছ ধরতে যাওয়া তার ভাইদের সাথে এবং খুব কৌশলীভাবে বোয়াল মাছ ধরার আনন্দময় চিত্র তাৎপর্যপূর্ণ রূপে ধরা দিয়েছে আলোচ্য গল্পে যা দৃশ্যপটে অনুপস্থিত। তাই বলা যায়, দৃশ্যপটে ফুটে উঠা দিকটি আলোচ্য গল্পের একমাত্র দিক নয়।
আরো পড়ুন
সাহিত্য পড়ি লিখতে শিখি। রচনামূলক প্রশ্ন। বাংলা। ৭ম শ্রেণি।
সাহিত্য পড়ি লিখতে শিখি। বাংলা। ৭ম শ্রেণি।
বুঝে পড়ি লিখতে শিখি। বাংলা । ৭ম শ্রেণি
চারপাশের লেখার সাথে পরিচিত হই। বাংলা। ৭ম শ্রেণি
অর্থ বুঝে বাক্য লিখি। বাংলা । ৭ম শ্রেণি
প্রমিত ভাষায় কথা বলি। বাংলা। ৭ম শ্রেণি
নানা রকম আকৃতি মাপি। গণিত। সপ্তম শ্রেণি