তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ও আমাদের বাংলাদেশ
সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
১। নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
রাশেদ নিয়মিত পত্রিকা পড়ে। আজ সে পত্রিকা খুলে “একুশ শতক এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি” শিরোনামে একটি লেখা দেখতে পেল। লেখাটি সে খুব আগ্রহ নিয়ে পড়ল। তারপর বিষয়টি নিয়ে সে তার বাবার সাথে আলোচনা করে বুঝতে পারল একুশ শতকের পৃথিবী আসলে জ্ঞানভিত্তিক একটা অর্থনীতির ওপর দাঁড়াতে শুরধ করেছে। এ কারণে পৃথিবীর মানুষ নতুন এক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছে। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার উপায় সম্পর্কে জানতে চাইলে তার বাবা বলেন, “একুশ শতকে টিকে থাকতে হলে সবাইকে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির প্রাথমিক বিষয়গুলো জানতে হবে।”
ক. প্রোগ্রামিং ধারণার প্রবর্তক কে? ১
খ. ই- গভর্ন্যান্স বলতে কী বোঝায়? ব্যাখ্যা কর। ২
গ. রাশেদ ও তার বাবার আলোচিত প্রযুক্তিতে চার্লস ব্যাবেজের ভূমিকা ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. একুশ শতকে টিকে থাকবে প্রয়োজনীয় দক্ষতার ব্যাপারে তুমি কি রাশেদের বাবার সাথে একমত? তোমার মতামত উপস্থাপন কর। ৪
উত্তর:
ক. প্রোগ্রামিং ধারণার প্রবর্তক হলেন অ্যাডা লাভলেস।
খ. গভর্ন্যান্স বা সুশাসনের জন্য দরকার স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিমূলক ব্যবস্থা। ডিজিটাল ব্যবস্থা প্রচলনের ফলে সরকারি ব্যবস্থাসমূহকে আধুনিক ও যুগোপযোগী করার পাশাপাশি সরকারি ব্যবস্থাসমূহের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা সম্ভব। এর ফলে নাগরিকের হয়রানি ও বিড়ম্বনার অবসান ঘটে এবং দেশে সুশাসনের পথ নিষ্কণ্টক হয়। শাসন ব্যবস্থায় ও প্রক্রিয়ার ইলেকট্রনিক বা ডিজিটাল পদ্ধতির প্রয়োগই হচ্ছে ই- গভর্ন্যান্স।
গ. রাশেদ ও তার বাবার আলোচিত প্রযুক্তিটির নাম তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি। এটি বর্তমান সময়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তি। একুশ শতকের এই পৃথিবীতে হয়তো এমন একজন মানুষও পাওয়া যাবে না যার জীবনে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি কোনোরুপ প্রভাব ফেলেনি। আর এই প্রযুক্তির বিকাশের পেছনে যেসব বিজ্ঞানী, ভিশনারি, প্রকৌশলী এবং নির্মাতাদের অবদান রয়েছে চার্লস ব্যাবেজ তাদের মধ্যে অন্যতম। তিনি একজন ইংরেজ প্রকৌশলী ও গণিতবিদ। তার হাতেই আধুনিক কম্পিউটারের বিকাশ শুরু হয়। এ কারণে তাকে আধুনিক কম্পিউটারের জনক বলা হয়। তিনি ডিফারেনস ইঞ্জিন ও এনালিটিক্যাল ইঞ্জিন নামে দুটি গণনা যন্ত্র তৈরি করেন। এই ইঞ্জিনগুলো যান্ত্রিকভাবে গণনা করতে পারত। তার তৈরি এনালিটিক্যাল ইঞ্জিনের বৈশিষ্ট্য আজকের কম্পিউটারের ডিজাইনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। তবে অর্থায়নের অভাবে সে সময় ব্যাবেজ তার প্রকল্পটি সম্পূর্ণ করতে পারেননি। তার মৃত্যুর ১২০ বছর পর ১৯৯১ সালে লন্ডনের বিজ্ঞান জাদুঘরে তার কানা অনুসরণ করে একটি ইঞ্জিন তৈরি করলে দেখা যায় সেটি সঠিকভাবে কাজ করছে। এ থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় যে, চার্লসের দুটি ইঞ্জিনই গণনার কাজ করতে পারত।
ঘ. একুশ শতকে টিকে থাকার প্রয়োজনীয় দতার ব্যাপারে রাশেদের বাবার বক্তব্য হলো সবাইকে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির প্রাথমিক বিষয়গুলো জানতে হবে। তার এই বক্তব্যের সাথে আমি একমত। কেননা একুশ শতকে এসে সম্পদের ধারণা পুরোপুরি পাল্টে গেছে। পৃথিবী একটা জ্ঞানভিত্তিক অর্থনীতির উপর দাঁড়াতে শুরু করেছে। তাই যারা এখন জ্ঞানভিত্তিক সমাজ তৈরি করার বিপরবে অংশ নিবে তারাই পৃথিবীর চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করবে। তবে এই নতুন বিপরবে অংশ নেয়ার জন্য বিশেষ এক ধরনের প্রস্তুতি প্রয়োজন। বর্তমান সময়ে বেঁচে থাকার সুনির্দিষ্ট দক্ষতাগুলো যদি আমরা দেখতে চাই তাহলে সেগুলো হবে পারস্পরিক সহযোগিতার মনোভাব, যোগাযোগ দক্ষতা, সুনাগরিকত্ব সমস্যা সমাধানে পারদর্শিতা, বিশেরণী চিন্তন দক্ষতা, সৃজনশীলতা এবং তার সাথে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিতে পারদর্শিতা। এসব দৰতার মধ্যে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিতে পারদর্শিতা সবচেয়ে প্রয়োজনীয় দৰতা হিসেবে খুব দ্রুত স্থান করে নিচ্ছে। তাই একুশ শতকে টিকে থাকার জন্য সবাই তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির প্রাথমিক বিষয়গুলো জানতে হবে। কারণ এই বিষয়গুলো জানা থাকলেই কেবল একজন এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে তার বিশাল জগতে পা দিতে পারবে। কিন্তু একজন যতকা পর্যন্ত এই প্রযুক্তি ব্যবহার করা না শিখবে, অভ্যস্ত না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত সে একুশ শতকের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে পারবে না। নিজের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য সবাইকে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির প্রাথমিক বিষয় সম্পর্কে ধারণা লাভ করতে হবে, দক্ষতা অর্জন করতে হবে।
২। নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
ফারহানার বাবা একটি মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে একাউন্টস ডিপার্টমেন্টে কাজ করেন। গত মাসে তার পদোন্নতি হওয়ায় কাজের চাপ অনেক বেড়ে গেছে। অফিসে কাজের চাপ কমানোর জন্য তিনি বাড়িতে কিছু কিছু কাজ করে এগিয়ে রাখার সিধান্ত নিলেন। তিনি কাজের সুবিধার্থে আইবিএম কোম্পানির একটি পার্সোনাল কম্পিউটার কিনে এনে তাতে ইন্টারনেটের সংযোগ লাগিয়ে দিলেন। এতে ফারহানারও পড়াশোনার অনেক সুবিধা হলো।
ক. ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েবের জনক কে? ১
খ. একুশ শতকের সম্পদের ধারণা ব্যাখ্যা কর। ২
গ. ফারহানার বাবার কেনা যন্ত্রটিতে বিল গেটসের অবদান- ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. উক্ত যন্ত্রটি ব্যবহার করে ফারহানার প্রাপ্ত সুবিধাসমূহ বিশ্লেষন কর। ৪
উত্তর:
ক. ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েবের জনক হলেন স্যার টিমোথি জন ‘টিম’ বর্নাস লি।
খ. একুশ শতকের সম্পদ হচ্ছে জ্ঞান। যার অর্থ কৃষি, খনিজ সম্পদ কিংবা শক্তির উৎস নয়, শিল্প কিংবা বাণিজ্য নয় এখন পৃথিবীর সম্পদ হচ্ছে সাধারণ মানুষ। তার কারণ শুধু মানুষই জ্ঞান সৃষ্টি করতে পারে, জ্ঞান ধারণ করতে পারে এবং জ্ঞান ব্যবহার করতে পারে। সম্পদের এই নতুন ধারণাটি মানুষের চিন্তা ভাবনার জগৎটি পাল্টে দিয়েছে।
গ. কারহানার বাবা তার কাজের সুবিধার্থে আইবিএম কোম্পানির একটি পার্সেনাল কম্পিউটার কিনেছেন। এই কম্পিউটার দিয়ে ব্যক্তিগত কাজ যেমন : লেখালেখি কিংবা হিসাব করা, অ্যসংগ্রহ সরবণ করা, ভিডিও এডিটিং করা, গ্রাফিক্স ডিজাইন করা ইত্যাদি সন্তোষজনকভাবে করা সম্ভব। কম্পিউটারটি যদিও আইবিএম কোম্পানির তৈরি তথাপি এই কম্পিউটারে মাইক্রোসফট কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটসের বিরাট অবদান রয়েছে। কেননা ১৯৮১ সালে আইবিএম কোম্পানি তাদের বানানো এই পার্সোনাল কম্পিউটারের অপারেটিং সিস্টেম তৈরির দায়িত্ব দেন মাইক্রোসফট কোম্পানিকে। তখন বিল গেটস প্রথমে এমএসডস এবং তারপর উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেম তৈরি করেন। বর্তমানে পৃথিবীর অধিকাংশ কম্পিউটার পরিচালিত হয় বিল গেটসের প্রতিষ্ঠিত মাইক্রোসফট কোম্পানির তৈরি অপারেটিং সিস্টেম সফটওয়্যার দিয়ে।
ঘ. উদ্দীপকে কারহানার বাবা একটি মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানির একাউন্টস ডিপার্টমেন্টের কর্মকর্তা। তিনি অফিসে তার কাজের চাপ কমানোর জন্য বাড়িতে কিছু কাজ করে এগিয়ে রাখার জন্য একটি পার্সোনাল কম্পিউটার কিনে তাতে ইন্টারনেট সংযোগ লাগিয়ে নিলেন। এতে কারহানার পড়াশোনায় বেশ সুবিধা হলে। নিচে কারহানার প্রাপ্ত সুবিধাগুলো বিশেরকা করা হলো :
১. কারহানা কম্পিউটারে তার ক্লাসের এসাইনমেন্ট সুন্দরভাবে তৈরি করতে পারে। এসাইনমেন্ট তৈরির প্রয়োজনীয় তথ্য সে ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহ করতে পারে।
২. অনলাইনে বসে কারহানা বিভিন্ন পত্রিকার শিবাপাতা পড়ে নিজের জ্ঞানের পরিধি বৃদ্ধি করতে পারে।
৩. সে বিভিন্ন দেশের বড় বড় লাইব্রেরির বইপত্রের অনলাইন সংস্কার পড়তে পারে।
৪. তার পাঠ্যবইয়ের যেকোনো বিষয় বোঝার বেত্রে ইন্টারনেটের তথ্যাদি ব্যবহার করতে পারে।
৫. অনলাইনে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানের শিক্ষার্থীদের সাথে একত্রিত হয়ে নিজের জ্ঞান শেয়ার করতে পারে।
৬. ইন্টারনেটে প্রাপ্ত বিভিন্ন স্থানের শিক্ষার্থীদের সাথে একত্রিত হয়ে নিজের জ্ঞান শেয়ার করতে পারে
৭. নিজের ক্লাসের, অন্যান্য স্কুলের এবং অন্যান্য দেশের শিৰার্থীদের সাথে ই-মেইল, অনলাইন চ্যাটের মাধ্যমে বন্ধুত্ব গড়ে তুলতে এক যোগাযোগ রবা করতে পারে।
৮. উচ্চ শিবা লাভের জন্য দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় এক বিদেশের শিবা প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রদত্ত সুযোগ সুবিধা সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করতে পারবে।
১. অনলাইনে বিভিন্ন ধরনের প্রতিযোগিতামূলক পরীবায় অংশ নিতে পারে।
১০. যেকোনো পাবলিক পরীবার কলাকা প্রকাশের সাথে সাথে সে ইন্টারনেট থেকে তা জেনে নিতে পারে।