ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি
প্রথম পত্র
এইচএসসি পরীক্ষা-২০২৪ এর প্রস্তুতি
প্রাক-ইসলামি আরব
0১. ইতিহাসের জনক কে?
উত্তরঃ ইতিহাসের জনক হলেন গ্রিক ঐতিহাসিক হেরোডোটাস।
০২. উটকে ‘মরুভূমির জাহাজ’ বলা হয় কেন ?
উত্তরঃ মরু অঞ্চলের যাতায়াতের প্রধান বাহন হওয়ায় উটকে মরুভূমির জাহাজ বলা হয়। আরবের অধিকাংশ অঞ্চলে মরুভূমি। আর উত্তপ্ত মরু অঞ্চলে উট চলাচলের একমাত্র উপযোগী প্রাণী। উট একবার পানি পান করে দীর্ঘদিন ধরে রাখতে পারে। তাই মরুবাসীরা খাদ্য, পানীয় সংগ্রহ ও যোগাযোগ প্রদান বহন এবং ক্রয়-বিক্রয়ের মাধ্যম হসাবে উটকে ব্যবহার করে। তাই উটকে মরুভূমির জাহাজ বলা হয়।
০৩. আল মালা কি?
উত্তরঃ আল মালা হল ইসলাম পূর্ব আরবের একটি রাজনৈতিক সংগঠন বা মন্ত্রণাসভা।
০৪. আরব দেশকে ‘জাজিরাতুল আরব’ বলা হয় কেন? ব্যাখ্যা কর।
উত্তরঃ জাজিরাতুল আরব বলতে আরব ভূখণ্ডকে বুঝায়। জাজিরা আরবি শব্দ। এর অর্থ উপদ্বীপ। আরব একটি ভূখণ্ডের নাম। সাধারণত তিনদিক পানি এবং একদিকে স্থল পরিবেষ্টিত ভূখণ্ডকে উপদ্বীপ বলা হয়। এশিয়া মহাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত আরব দেশ বিশ্বের সর্ববৃহৎ উপদ্বীপ। এর তিন দিক বিশাল জলরাশি এবং একদিক বিস্তীর্ণ মরুপ্রান্তর দ্বারা বেষ্টিত। এই রকম ত্রিভুজাকৃতির ভৌগলিক অবস্থানের জন্যই আরব দেশকে জাজিরাতুল আরব বলা হয়।
০৫. জাহেলিয়া শব্দের অর্থ কি?
উত্তরঃ জাহেলিয়া শব্দের অর্থ অজ্ঞতা, তমসা, বর্বরতা বা কুসংস্কার।
0৬. ‘জাজিরাতুল আরব’ অর্থ কি?
উত্তরঃ ‘জাজিরাতুল আরব’ অর্থ হল উপদ্বীপ।
০৭. মিশরীয় লিখন পদ্ধতির নাম কি?
উত্তর: মিশরীয় লিখন পদ্ধতির নাম হায়ারোগ্লিফিক।
০৮. প্যাপিরাস কি? ব্যাখ্যা কর।
উত্তরঃ প্যাপিরাস বলতে এক ধরনের নলখাগড়া জাতীয় ঘাস বা উদ্ভিদকে বোঝার যার মাধ্যমে মিশরীয়রা কাগজ আবিষ্কার করে। নীলনদের তীরে নলখাগড়া জাতীয় এক ধরনের ঘাস জন্মাতো। তারা এগুলা দিয়ে বিশেষ পদ্ধতিতে এক উন্নত মানের কাগজ আবিষ্কার করত। এক্ষেত্রে প্যাপিরাস গাছের কান্ডের ছাল ছাড়িয়ে পাশাপাশি রাখা হতো। একটির ওপর আরেকটির ফালি রেখে রোদে শুকানো হতো। এরপর ফালিগুলোকে চাপ দিয়ে বানানো হতো প্যাপিরাসের কাগজ।
০৯. প্রাক ইসলামি আরবের একেশ্বরবাদী সম্প্রদায়ের নাম কী?
উত্তরঃ প্রাক-ইসলামি আরবের একেশ্বরবাদী সম্প্রদায়ের নাম হানিফ সম্প্রদায়।
১০. কিউনিফর্ম বলতে কী বোঝায়?
উত্তর: কিউনিফর্ম হল সুমেরীয়দের আবিস্তৃত লিখন পদ্ধতি। সভ্যতার প্রথম দিকে সুমেরীয় লিপি ছিল মিশরীয়দের মত চিত্রলিপি ভিত্তিক। পরবর্তীকালে নিজেদের লেখার গতিশীল করতে তারা নতুন লিখন পদ্ধতি কিউনিফর্ম উদ্ভাবন করে। কিউনিফর্মকে বলা হয় অক্ষর ভিত্তিক চিত্রলিপি। এই লিপি বাম দিক থেকে ডান দিকে লেখা হতো।
১১. হানিফ সম্প্রদায় কারা? ব্যাখ্যা কর।
উত্তরঃ ইসলাম পূর্ব যুগে আরবের আল্লাহর একত্ববাদ এর বিশ্বাসীরা হলো হানিফ সম্প্রদায়। জাহেলিয়া যুগে আরব সমাজের মুষ্টিময় লোক আল্লাহর একত্ববাদে বিশ্বাসী ছিল। তারা দেব-দেবের পূজা থেকে বিরত থাকতো। এদের সংখ্যা ছিল খুবই কম। তারা শুধু মূর্তিপূজা নয় তৎকালীন আরবের অন্যায় অত্যাচার কুসংস্কার অনৈতিক জীবনযাপন ঘোরবিরোধী ছিল। এরা হযরত ইব্রাহিম (আঃ) এর প্রচারিত তাওহীদের অনুসারী ছিল। জাহেলিয়া যুগে এরাই হানিফ সম্প্রদায় নামে পরিচিত ছিল।
১২. মিশরীয় লিখন পদ্ধতির সম্পর্কে ব্যাখ্যা কর।
উত্তরঃ মিশরীয়দের লিখন পদ্ধতি কে বলা হয় হায়ারোগ্লিফিক। এটি ছিল একটি লিখিত ভাষা। এ ভাষায় নানা প্রকার দ্রব্য ও প্রকৃতির বিষয় প্রভৃতি ছবি আঁকা থাকতো যার মাধ্যমে জিনিসগুলো পরিচয় বা নাম জানা সম্ভব হতো। হায়ারোগ্লিফিক লিপি প্রথমে তৈজসপত্রে এবং কবরে মৃতের পরিচয়ের পলক আকারে খোদাই করা হতো। মিশরে প্যাপিরাস কাগজ আবিষ্কৃত হলে এতে এ লিপি উত্তীর্ণ করা হয়। এই লিখন পদ্ধতি তিনটি রূপে বিকাশ লাভ করেছে। প্রায় ৭৫০ টি চিত্রলিপির চিহ্ন দিয়ে প্রাচীন মিশরীয়রা লিপি পদ্ধতির তৈরি করা হয়েছিল।
১৩. ‘ইয়েমেন’ শব্দের অর্থ কি?
উত্তরঃ ইয়েমেন শব্দের অর্থ সুখী।
১৪. কাকে ‘শেখ’ বলা হতো?
উত্তরঃ প্রাক-ইসলামি আরবের গোত্রপতিকে শেখ বলা হতো।
১৫. কোন অঞ্চলে সুমেরীয় সভ্যতার বিকাশ ঘটেছিল?
উত্তরঃ মেসোপটেমীয় অঞ্চলে সুমেরীয় সভ্যতার বিকাশ ঘটেছিল।
১৬. মেসোপটেমীয় অঞ্চলকে সভ্যতার লীলাভূমি বলা হয় কেন?
উত্তরঃ মেসোপটেমীয় অঞ্চলে বিশ্বের প্রাচীন সভ্যতাগুলোর বেশিরভাগ গড়ে উঠেছিল বিধায় একে সভ্যতার লীলাভূমি বলা হয়। আজ থেকে প্রায় সাত হাজার বছর পূর্বে প্রাচীন মিশরীয় সভ্যতার সমকালীন টাইগ্রিস ও ইউফ্রেটিস নদীর মধ্যবর্তী অঞ্চলে কয়েকটি বিচ্ছিন্ন সভ্যতা গড়ে ওঠে, যার সম্মিলিত নাম মেসোপটেমীয় সভ্যতা। গ্রিক ঐতিহাসিকেরা সর্বপ্রথম এ অঞ্চলের নাম দেন মেসোপটেমিয়া। এর অর্থ দুই নদীর মধ্যবর্তী ভূমি। টাইগ্রিস ও ইউফ্রেটিস (দজলা ও ফোরাত) নদীর মধ্যবর্তী ভূখণ্ড আরব মরুভূমির উত্তরাঞ্চলকে এমনভাবে ঘিরে রেখেছে, এর আকৃতি দেখতে অনেকটা অর্ধচন্দ্রের মতো। এ কারণে ভূগোলবিদ ব্রেসটেড (Breasted) এ অঞ্চলের নাম দিয়েছেন উর্বর অর্ধচন্দ্রিকা (Fertilecresent) । প্রাচীন বেশিরভাগ সভ্যতা এ অঞ্চলে গড়ে ওঠে বলে একে সভ্যতার লীলাভূমি বলা হয়।
উত্তরঃ প্রাক-ইসলামি আরবের মরুবাসী যাযাবরদের বেদুইন বলা হয়।
১৮. আসাবিয়া বলতে কী বোঝায়? ব্যাখ্যা কর।
উত্তরঃ প্রাক-ইসলামি আরবের গোত্রপ্রীতিকে আসাবিয়া বলা হয়। প্রাক ইসলামি আরবে কোনো কেন্দ্রীয় শাসনব্যবস্থা ছিল না। এসময় গোত্র ভিত্তিক শাসনব্যবস্থা বিদ্যমান ছিল। সমগ্র আরব উপদ্বীপে ছোটবড় অনেক গোত্রের অস্তিত্ব ছিল। কয়েকটি বংশ বা বনু বা হায়া (Hayy) নিয়ে একটি গোত্র গঠিত হতো। গোত্রের প্রধানের পদবি ছিল শেখ। এসব গোত্রের মধ্যে অন্তদ্বন্দ ছিল একটি স্বাভাবিক ঘটনা। তবে গোত্রের প্রত্যেক সদস্য গোত্রের প্রতি আনুগত্যশীল ছিল। আনুগত্যের এ ধারণাকে গোত্রপ্রথা এবং গোত্রপ্রীতিকে আসাবিয়া বলা হয়।
১৯. ‘ফারাও’ কোন রাজাদের উপাধি ছিল?
উত্তরঃ ফারাও মিশরের রাজাদের উপাধি।